ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পাবনায় অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বিআরটিসি বাস ডিপো 

প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মহাকর্মপরিকল্পনা
পাবনায় অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বিআরটিসি বাস ডিপো 

বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলামের (অতিরিক্ত সচিব) জাদুকরি হাতের ছোঁয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বিআরটিসি’র পাবনা বাস ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের। যাত্রী সেবায় উন্নত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সারা দেশের ন্যায় পাবনা বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধিসহ ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের মান বৃদ্ধি হয়েছে। মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে অকল্পনীয়ভাবে বদলে গেছে পাবনা বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভিতরের ও বাইরের চিত্র। দু-তিন বছর আগেও যেখানে দেখা গেছে পুরনো জড়াজীর্ণ ভবন, অল্প বৃষ্টিতেই ইয়ার্ডে জমতো হাঁটু পানি, ছিল জঙ্গলসহ মশার ব্যাপক উপদ্রব।

২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান হিসাবে যোগদান করেন অতিরিক্ত সচিব মো. তাজুল ইসলাম। তারপর থেকেই সারাদেশে বিআরটিসি’র ব্যাপক উন্নয়ন হয়। বিআরটিসির নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সততা, প্রজ্ঞা, মেধা, মনন, সময়য়োপযোগী ও সঠিক দিক-নির্দেশনার মাধ্যমে দক্ষ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে বিআরটিসি’কে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান থেকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় পাবনা বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে নতুন রূপে যা সহজেই চোখে পরার মতো।

সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায় যে, পুরাতন ভবনগুলো বর্তমানে নতুনভাবে মেরামত ও রং করে সাজানো হয়েছে নতুন রুপে। পাবনা বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ২.০৫৭৫ একর নিজস্ব জমির উপর নির্মিত হয়ে যাত্রীদের নিয়মিত নিরলসভাবে সেবা প্রদান করে আসছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত হয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। ইয়ার্ড ভরাট করে উচুঁ করা হয়েছে। প্রবেশ দ্বারে নির্মিত হয়েছে ডিজিটাল গেট, যাত্রীদের বসার স্থানে টাইলস দ্বারা মেরামত করে বসার ব্যবস্থা উন্নতমানের করা হয়েছে, যাত্রীদের কমেছে দুর্ভোগ, বেড়েছে সেবার মান। আর এ সবই হয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যানের সঠিক দিক-নির্দেশনায়, আধুনিক ও যুগোপযোগী কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি, কর্মচারীদের উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষতা বৃদ্ধি। পরিবর্তন হয়েছে অফিসের ভিতরের আসববাপত্র ও বাইরের দৃষ্টি নন্দন চিত্র। আগে যেখানে কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ইউনিফর্ম ছাড়া কর্মস্থলে আসা যাওয়া করতো, বর্তমানে সেখানে বিআরটিসি’র মনোগ্রাম সম্বলিত ইউনিফর্ম পরিধান করে কর্মস্থলে আসেন। পাবনা বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে বর্তমানে স্থায়ী এবং অস্থায়ী মিলে সর্বমোট ১০৮জন কর্মকর্তা/কর্মচারী নিয়ে সেবা দিয়ে আসছে।

“আয় বৃদ্ধি, ব্যয় সংকোচন, যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন” এই ¯েøাগানকে সামনে রেখে পাবনা বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির বর্তমানে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং লাভজনক অবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে। চলতি জুলাই মাসে সর্বমোট আয় ১ কোটি ৪৯ লক্ষ ৯৮ হাজার আটশত একুশ টাকা ও ব্যয় ১কোটি ৩৮ লক্ষ ৯৩হাজার নয়শত নয় টাকা এবং লাভ হয়েছে ১১ লক্ষ ৪ হাজার নয়শত বার টাকা। ডিপোর অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাওনা টাকার জন্য বছরের পর বছর প্রধান কার্যালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরতে হতো। বর্তমান চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় অবসর প্রাপ্তদের বিআরটিসি’র নিজস্ব আয় হতে যে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ অবসরে গিয়েছেন তাদের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই বিনা হয়রানিতে গ্র্যাচুইটি, সিপিএফ ও ছুটি নগদায়নের টাকা পাচ্ছেন। তাছাড়াও কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য শ্রান্তি বিনোদন ভাতাসহ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করে প্রতিটি কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের অন্তরে জায়গা করে নিয়েছেন। বিআরটিসি’র পাবনা বাস ডিপোর গাড়ীগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য স্প্রে গান ক্রয় করা হয়েছে। কারিগরি কাজের জন্য সেফটি টুলস, হেলমেট,হ্যান্ডগøাবস ও গ্যামবুট প্রদান করা হয়,এতে কারিগরদের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাবনা বাস ডিপোতে ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত কম্পিউটার ছিল না। বর্তমান চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় ডিপোর প্রত্যেক শাখায় একটি করে ডেস্কটপ কম্পিউটার ও ল্যপটপ প্রদান করা হয়। সকল শাখা প্রধানদের সাথে যোগাযোগ সহজ করা ও কাজের অগ্রগতির জন্য ইন্টারকম টেলিফোনিক সিস্টেম চালু করা হয়েছে। প্রতিটি বাসে ডরভর ও ঠঞঝ সংযোগ করা হয়েছে। ফলে যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন ও গাড়ীর সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা সম্ভব হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে সরকারের মেগা প্রকল্প রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের যাতায়াতের জন্য বিআরটিসি পাবনা ডিপো এসি বাস সরবরাহ করে সার্বিক সহযোগীতা করে আসছে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের যথাযথ অংশীদারিত্ব বজায় রাখছে।

প্রশিক্ষণার্থীদের সেবায় নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে পাবনা বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি। বর্তমানে চলমান ৩৭টি বাসের মাধ্যমে বিভিন্ন রুটে যাত্রীদের সেবা প্রদান করে আসছে। দক্ষ প্রশিক্ষক দ্বারা হালকা ও ভারী মোটর ড্রাইভিং প্রশিক্ষণে মোট ৫টি প্রশিক্ষণ কার দ্বারা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রদান করে আসছে। ঝঊওচ প্রকল্পের আওতায় প্রতি চার মাস অন্তর অন্তর বেকার ও কর্মহীন,দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের ও স্বল্প আয়ের ১০০ জন প্রশিক্ষণার্থী’কে বিনামূল্যে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ প্রদানসহ আনসার ভিডিপি ও মহিলা অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

পাবনা বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কয়েকজন যাত্রী ও প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে, যাত্রী সেবা ও প্রশিক্ষণের মান আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত সেবা পেয়ে যাত্রীরা খুবই খুশি। ম্যানেজার (অপারেশন) জনাব মোঃ সালাহ উদ্দিন রুমীর সাথে কথা বলে জানা যায় যে, আমাদের মাননীয় চেয়ারম্যান স্যারের মূলমন্ত্র “আয় বৃদ্ধি, ব্যয় সংকোচন, যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন” এই স্লোগান’কে সামনে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে পাবনা বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি। যাত্রীদের বিশ্রামাগার, মসজিদ ঘর, মহিলাদের আলাদা ওয়াশরুম, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ডিজিটাল ক্লাস রুম নির্মিত হয়েছে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি মাসের ১ তারিখে বেতন-ভাতা প্রদান করা এ সবই সম্ভব হয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যান মহোদয়ের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দিক-নির্দেশনায়।

বিআরটিসি,চেয়ারম্যান,উন্নয়ন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত